ঢাকাশুক্রবার , ২৯ আগস্ট ২০২৫
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নদীভাঙনে দিশেহারা লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা তীরের হাজারো মানুষ

ডেস্ক রিপোর্টার
আগস্ট ২৯, ২০২৫ ২:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পর এবার ভয়াবহ নদীভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী মানুষ। প্রতিদিন নতুন নতুন বসতভিটা, কৃষিজমি ও বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। অসহায় মানুষজন ঘরবাড়ি সরিয়ে উঁচু রাস্তা ও নিরাপদ আশ্রয়ে ঠাঁই নিচ্ছেন।

ইতিমধ্যে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণচড়া, কুটিপাড়া, আদর্শ বাজার, চীনাতলি, রাজপুর ইউনিয়নের তাজপুর, আদিতমারি উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারি, হাতিবান্ধা উপজেলার সিন্ধুনায় ও সদর উপজেলার মঘোলহাট ইউনিয়নের ধরলা বামতীরবর্তী এলাকাজুড়ে ভয়াবহ ভাঙন খো েিয়ছে।

সরেজমিনে খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণচড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তার ডান তীরবর্তী এই গ্রামে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে আরও শতাধিক ঘরবাড়ি। শুধু বসতভিটাই নয়, ভাঙনের কবলে পড়ে নদীতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩শ বিঘা জমির ধান, সবজি ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। আতঙ্কে দিন-রাত নির্ঘুম সময় কাটাচ্ছেন এখানকার মানুষ।

ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ৪, ৫, ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড। ঝুঁকিতে পড়েছে আদর্শপাড়া, কুঠিপাড়া, মিলন বাজার ও প্রেমের বাজার এলাকা। সবচেয়ে বড় আশঙ্কা খো েিয়ছে খুনিয়াগাছ-রাজপুর-রংপুর সড়কের ওপর, যা এ অঞ্চলের হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পাকা রাস্তা।

হরিণচড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, “তিস্তার ভাঙনে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। নদীর স্রোতের দিক পরিবর্তন হয়ে ডান পাশে প্রবাহিত হওয়ায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। কৃষিজমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজার ও পাকা রাস্তা সবই ভাঙনের হুমকিতে।”

প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস এই গ্রামে। একজনকে বসতভিটা তিন থেকে পাঁচবার পর্যন্ত সরাতে হয়েছে। অনেকে জমিজমা, সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। যাদের একসময় ছিল জমি, ঘরবাড়ি ও স্বচ্ছল জীবনযাপন—তাদের এখন ঠাঁই হয়েছে শুধু উঁচু সড়ক কিংবা আত্মীয়ের বাড়ি। নিঃস্ব পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার জানান, “অতীতে আমরা নিজেরা অর্থ সংগ্রহ করে বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করেছিলাম। কিন্তু তিস্তার প্রবল স্রোতে সেই বাঁধ টিকেনি। বর্তমানে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সরকারিভাবে টেকসই উদ্যোগ না নিলে এ অঞ্চলের মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাবে।”

এদিকে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শূনিল কুমার রায় বলেন, জেলায় তিস্তা নদীতে প্রায় ৪৮টি স্থানে ছোট-বড় ভাঙন হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। তবে বরাদ্দ না াকায় পুরোপুরি প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, “যথায বরাদ্দ পাওয়া গেলে ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে আরও জিও ব্যাগ ফেলা হবে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কার্যকর ও ীর্ঘমেয়াি উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুম এলেই তিস্তা ও ধরলার ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। তারা দ্রুত সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।